বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে মানববন্ধনে শেরে বাংলা স্কুলের শিক্ষকরা

বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে মানববন্ধনে শেরে বাংলা স্কুলের শিক্ষকরা

দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই বারবার সংশোধনের সুযোগ দেয়ার পরও সংশোধন না হওয়ায় যেসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কতিপয় শিক্ষকের রোশানলে পড়েছেন রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন, আবারও সেই একই অনিয়মের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সেসব শিক্ষকরা।

জানা গেছে, প্রাথমিক শাখার শিক্ষক হামিদা খাতুনের নেতৃত্বে আজও (সোমবার) কর্তৃপক্ষের কোনোরকম অনুমতি ছাড়াই এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালেই আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে ওইসব শিক্ষকরা। অতীতেও একইভাবে পাঠদান বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠান চলাকালে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কোচিং বাণিজ্যের পেছনে দৌঁড়াতেন তারা।

বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এই সিন্ডিকেটের শুরু থেকেই অনিয়মের মাধ্যমে লব্দ আরও একাধিক সুবিধা বহাল রাখতেই মূলত সদ্য সাবেক সভাপতি রিয়াজের বিরুদ্ধে অবাঞ্চিত-ভিত্তিহীন অভিযোগের এতো আয়োজন। অথচ তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধেই আদৌ নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানটিতে চলমান এইচএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা চলাকালে হামিদা খাতুনের নেতৃত্বে একাধিক শিক্ষক দায়সাড়াভাবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আজ (সোমবার) সকাল দশটার মধ্যেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের আয়োজন করে।

এ সময় তারা তাদের বিরুদ্ধে (সম্প্রতি) যাওয়া ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের তদন্ত রিপোর্টকেও একপেশে আখ্যায়িত করেন। একইসাথে হামিদা খাতুনের নেতৃত্বে মানববন্ধনে না আসা শিক্ষকদেরও কোনো কারণ ছাড়াই বরখাস্তের দাবি তোলেন।

এদিকে সরেজমিন প্রেসক্লাবে গিয়ে জানা যায়, শিক্ষক কর্মচারী ও অভিভাবকদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেও দীর্ঘদিন আগে থেকেই অন্তরালে থাকা হামিদা খাতুনের এই শিক্ষক সিন্ডিকেটের গুটিকয়েক শিক্ষকই কেবল সেখানে অংশ নেন। হামিদা খাতুনের পরামর্শে ওইসব শিক্ষকরাই আবার তাদের স্বামী-সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের অভিভাবক সাজিয়ে মানববন্ধনে দাঁড় করান। টাকার বিনিময়ে ভুয়া অভিভাবক সাজানোর নাটকও হয়েছে সেখানে। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সেসব অভিভাবকরা বলতে পারেননি তাদের সন্তান ওই প্রতিষ্ঠানটির কোন শাখায় বা কোন ক্লাসে পড়ে।

মানববন্ধনে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক রিয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ চাইলে তাও তারা দেখাতে পারেননি। রিয়াজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঢালাও অভিযোগেরও কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেননি।

বরং শুরু থেকেই বিভিন্ন মহলেই বলিবলা হচ্ছে, কতিপয় ব্যক্তির মদদেই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির হীন উদ্দেশ্যেই প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান গভর্নিং বডির প্রধান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদের অনুমতি প্রাপ্তির বিষয়টি উপেক্ষা করেই এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি মমতাজ বেগম বলেন, আমরা এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না। পরে অবগত হয়েছি; তারা (কতিপয় শিক্ষক) আমাদের অনুমতি ছাড়াই প্রতিষ্ঠানে ছিলেন না। অনুপুস্থিত থাকার বিষয়টি আমরা দেখব এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top