676

11/21/2025 সিটি ব্যাংকের টাকায় পারটেক্সের ৩ ইউনিট ক্রয়: নাবিল গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতির তদন্ত চেয়ে দুদকে চিঠি

সিটি ব্যাংকের টাকায় পারটেক্সের ৩ ইউনিট ক্রয়: নাবিল গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতির তদন্ত চেয়ে দুদকে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৩৪

সিটি ব্যাংকের আমানতকারীদের জমাকৃত অর্থ ব্যবহার করে নাবিল গ্রুপের মাধ্যমে পারটেক্স স্টার গ্রুপের তিনটি ইউনিট অধিগ্রহণে জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদুল ইসলাম।

আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় ও বিএফআইইউ দপ্তরে এই আবেদনটি জমা দেওয়া হয়।

আইনজীবীর দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি পারটেক্স স্টার গ্রুপের তিনটি শিল্প ইউনিট— স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলস লিমিটেড, পারটেক্স ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং পারটেক্স পিভিসি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড— নাবিল গ্রুপ অধিগ্রহণ করেছে। অভিযোগ উঠেছে, এই অধিগ্রহণের পুরো অর্থায়ন হচ্ছে সিটি ব্যাংকের টাকায়।

আবেদনে বলা হয়, নাবিল গ্রুপের নামে সিটি ব্যাংক তড়িঘড়ি করে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ঋণসীমা অনুমোদন করে। সেখান থেকেই প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে পারটেক্সের ওই তিনটি কোম্পানি কিনতে। অর্থাৎ ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা দিয়েই ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের কোম্পানি কেনা হচ্ছে।

চিঠিতে দাবি করা হয়, সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার পারটেক্স স্টার গ্রুপের ওই তিনটি কোম্পানির সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। তিনি হঠাৎ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং এর অল্প সময়ের মধ্যেই নাবিল গ্রুপের কাছে ইউনিটগুলো বিক্রি সম্পন্ন হয়।

আইনজীবী অভিযোগ করেন, এই পুরো লেনদেনটি একটি পূর্বপরিকল্পিত জালিয়াতি। এতে ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান, বোর্ডের প্রভাবশালী সদস্য এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মাশরুর আরেফিনের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। ঋণ সুবিধা বাড়ানো, জামানত ছাড়া ঋণ এবং অনুমোদনের সময়সীমা নিয়ে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, নাবিল গ্রুপের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। পারটেক্স স্টার গ্রুপের ইউনিটগুলোর শেয়ার হস্তান্তরে অস্বাভাবিকতা এবং তড়িঘড়ি করে মালিকানা বদল সন্দেহজনক উদ্দেশ্য নির্দেশ করে। আইনজীবী শঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই প্রক্রিয়া দেশের ব্যাংকিং খাত ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।

জাতীয় স্বার্থ, জনগণের আমানত ও আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষায় আইনজীবী শহিদুল ইসলাম চিঠিতে চারটি বিষয়ে দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন:

১. সিটি ব্যাংক কর্তৃক নাবিল গ্রুপকে দেওয়া ১,৮০০ কোটি টাকার ক্রেডিট লিমিটের অনুমোদন প্রক্রিয়া যাচাই করা।
২. তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই ঋণসীমা ব্যবহার করে পারটেক্সের ইউনিট অধিগ্রহণের অর্থায়ন বন্ধ রাখা।
৩. সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, তৎকালীন বোর্ড সদস্য ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা।
৪. এই লেনদেনে কোনো ঘুষ লেনদেন, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বা সংঘবদ্ধ প্রতারণা হয়েছে কি না, তা তদন্ত করা।

আইনজীবী শহিদুল ইসলাম বলেন, “এটি জনগণের আমানতের টাকার অপব্যবহার। ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া এত বড় অনিয়ম সম্ভব নয়। তাই দুদক ও বিএফআইইউ-এর কাছে এই বিষয়ে জরুরি তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছি।”

সম্পাদক:
যোগাযোগ: ৩২/২, প্রিতম জামান টাওয়ার, (১১ তলা), পুরানা পল্টন, ঢাকা - ১০০০
মোবাইল: +৮৮ ০১৭৮৭ ৩১৫ ৯১৬
ইমেইল: infobanglareport@gmail.com