সেই নারী পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

সেই নারী পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

ঢাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় তিনদিন অবস্থান করে চট্টগ্রামের কর্মস্থলে হাজিরা দেখানো চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় কর্মরত সেই নারী সাব-ইন্সপেক্টর নওশীন মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছে।

সম্প্রতি নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের নির্দেশে নওশীনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিষয়টি জানাজানি হয়। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা।

এর আগে গত বছরের ১৩ মার্চ নগর পুলিশ কমিশনারের কাছে ভুক্তভোগী এক নারীর দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করে সাব-ইন্সপেক্টর নওশীনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছিলেন সিএমপির অন্যতম এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

এদিকে ভুক্তভোগী বিসিএস ক্যাডার ওই নারী কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে সাব-ইন্সপেক্টর নওশীনসহ কুড়িগ্রাম রৌমারী সার্কেলে কর্মরত পুলিশের এএসপি সোহেল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালতে মামলাও করেন।

বাদীর অভিযোগ, ওই মামলায় এএসপি সোহেল আদালত থেকে জামিন নিলেও সাব-ইন্সপেক্টর নওশীন আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।

বাদী আরও অভিযোগ করেন, গত বছরের ১১ নভেম্বর ভুক্তভোগী আরেক নারীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় এএসপি সোহেল উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠনের পর বিচার শুরুর আদেশ হয়। তা সত্ত্বেও বিধান অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত না করে তাকে এখনও স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে।

জানা যায়, ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর মালিবাগে এএসপি সোহেলের বাসায় গেলে তাকে এবং ওই নারী এসআইকে একসঙ্গে দেখে ফেলেন। এ সময় তাদের দুজনের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করলে তাকে তারা মারধর করেন।

গত বছর ১৩ মার্চ নগর পুলিশ কমিশনারের কাছে ওই নারীর দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করেন সিএমপির উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা। অভিযোগ তদন্ত করে ঘটনার সময় মালিবাগে এসএসপি সোহেলের বাসায় ওই সাব ইন্সপেক্টর (নওশীন মজুমদার) অবস্থান করলেও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য একই দিন তার চট্টগ্রামের কর্মস্থল ইন-সার্ভিস-ট্রেনিং সেন্টারে হাজির দেখানোর মতো অপরাধ সংঘটন করেছেন। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের কল লিস্ট ও স্থির চিত্র বিশ্লেষণ করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করেন উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা।

নওশীনকে গ্রেপ্তার করতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিতে গত ২৩ মার্চ পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের কাছে লিখিত আবেদন করেন বাদী। জানতে চাইলে পিবিআই, ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। আমাদের কাজ তদন্ত করা।

ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও নওশীনকে গ্রেপ্তার বা সাসপেন্ড কেন করা হয়নি জানতে চাইলে সিএমপির উপকমিশনার (সদর) আবদুল ওয়ারিশ বলেন, পুলিশ সার্ভিস রুল অনুযায়ী-যেকোনো পুলিশ সদস্য ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তারের আগে সাময়িক বরখাস্ত করা যায় না।

চট্টগ্রামের সিনিয়র আইনজীবী এবং জেলা আদালতের পিপি ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, যেকোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রেকর্ড হওয়ার পর তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার আইনি বিধান রয়েছে।

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top